সফটওয়্যার কর্মের নিবন্ধনঃ প্রতিটি সৃষ্টিশীল কর্মই কপিরাইট যোগ্য। এই নিবন্ধে আমরা সফটওয়্যার কপিরাইট প্রসেসটা দেখবো। (সফটওয়্যার, ওয়েবসাইট, মোবাইল অ্যাপস প্রভৃতি) ১. কপিরাইট : কোন সৃজনশীল কর্মের উপর সৃজনকারীর নৈতিক এবং আর্থিক অধিকারই হচ্ছে কপিরাইট। সফটওয়্যার, ওয়েবসাইট, মোবাইল অ্যাপস, সাহিত্য, শিল্প, নাটক, সংগীত, চলচ্চিত্র প্রভৃতি বিষয়ে কপিরাইট নিবন্ধন করা যায়। ২. কপিরাইট নিবন্ধন করলে সুবিধা : কপিরাইট নিবন্ধন করলে নিজের ও উত্তরাধিকারীর মালিকানা সুরক্ষা নিশ্চিত হয়। আইনগত জটিলতায় মালিকানার প্রমাণপত্র হিসেবে আদালতে কপিরাইট সনদ ব্যবহার করা যায়। ৩. সফটওয়্যার কর্মের নিবন্ধন প্রক্রিয়া : প্রকাশিত ও অপ্রকাশিত উভয় ধরনের সফটওয়্যার কর্ম নিবন্ধন করা যায়। কপিরাইট আইন, ২০০০ এর ২৮(ক) ধারার বিধানমতে সফটওয়্যারকর্মের কপিরাইট এর মেয়াদ যে বছর কর্মটি প্রথম প্রকাশিত হবে তার পরবর্তী পঞ্জিকাবর্ষের শুরু থেকে ৬০(ষাট) বছর পর্যন্ত। ৩.১. সফটওয়্যার প্রণেতা কর্তৃক নিবন্ধনের ক্ষেত্রে যে সকল কাগজপত্র দাখিল করতে হবে- নির্ধারিত ফরমে আবেদনপত্র ০৩(তিন) কপি। সফটওয়্যার কর্ম সিডি আকারে ০২(দুই) কপি ও প্রিণ্ট আকারে ০২ (দুই) কপি। বাংলাদেশ ব্যাংক/সোনালী ব্যাংকের যেকোন শাখায় কৃত ১-৩৪৩৭-০০০০-১৮৪১ কোড নম্বরে ১০০০/-(এক হাজার) টাকা ট্রেজারী চালান করে তার মূল কপি এবং একটি ফটোকপি। কর্মটি মৌলিক মর্মে আদালতে কোন মোকদ্দমা বিচারাধীন নেই এবং প্রদত্ত তথ্য নির্ভুল ঘোষণা সংবলিত ৩০০/-(তিনশত) টাকার ননজুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে অঙ্গীকারনামা। বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রমাণের জন্য আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয়পত্র/পাসপোর্টের সত্যায়িত ফটোকপি। পাসপোর্ট সাইজের দুই কপি সত্যায়িত ছবি। ৩.২. প্রতিষ্ঠানের নামে নিবন্ধনের জন্য যে সকল কাগজপত্র দাখিল করতে হবে- প্রতিষ্ঠানের নামে কপিরাইট নিবন্ধনের জন্য ব্যক্তির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য সকল কাগজপত্রের সাথে কোম্পানীর মেমোরেন্ডাম, ট্রেড লাইসেন্স, টিআইএন সার্টিফিকেট এর সত্যায়িত ফটোকপি। নিয়োগকর্তা হিসাবে প্রতিষ্ঠান স্বত্বাধিকারী হলে সৃজনকারীকে প্রতিষ্ঠান প্রদত্ত নিয়োগপত্রের সত্যায়িত ফটোকপি। হস্তান্তর সূত্রে মালিক হলে ৩০০/-(তিনশত) টাকার ননজুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে কপিরাইট হস্তান্তর দলিল। ৪. কপিরাইট প্রাপ্তির ক্ষেত্রে অপেক্ষাকাল : কপিরাইট বিধিমালা-২০০৬ এর ৪(৪) বিধি মোতাবেক কপিরাইট রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত যেকোন কর্মের বিষয়ে আবেদনপ্রাপ্তির পর বর্ণিত কর্মের বিষয়ে আপত্তির সুযোগ প্রদানের জন্য ৩০(ত্রিশ) দিন অপেক্ষা করতে হবে। ৫. কপিরাইট লঙ্ঘন হলে প্রতিকার : কপিরাইট আইন, ২০০০ এর ৮১ ধারার বিধানমতে, কপিরাইট লঙ্ঘনজনিত অপরাধ দেওয়ানী আদালতে বিচার্য এবং এধরনের মামলা এখতিয়ারাধীন জেলাজজ আদালতে দায়ের করতে হবে। ৬. সফটওয়্যার কর্মের কপিরাইট লঙ্ঘনের শাস্তি : কপিরাইট আইন, ২০০০ এর ৮৪(ক) ধারার বিধানমতে সফটওয়্যার কর্মের কপিরাইট লঙ্ঘনের শাস্তি অনূর্ধ্ব ০৪(চার) বছর কিন্তু অন্যূন ০৬(ছয়) মাস কারাদন্ড এবং অনূর্ধ্ব চার লক্ষ টাকা কিন্তু অন্যূন এক লক্ষ টাকা অর্থদন্ড এবং লঙ্ঘিত কপি ব্যবহারের শাস্তি অনূর্ধ্ব ০৩ (তিন) বছর কিন্তু অন্যূন ০৬ (ছয়) মাস মেয়াদরে কারাদ- অথবা অনূর্ধ্ব ০৩ (তিন) লক্ষ টাকা কিন্তু অন্যূন ০১ (এক) লক্ষ টাকার অর্থদন্ড- [ধারা ৮৪(খ)]। ৭. কপিরাইট লঙ্ঘন রোধে পুলিশের ক্ষমতা : উক্ত আইনের ৯৩ ধারা বিধানমতে গ্রেফতারি পরোয়ানা ছাড়াই সাবইন্সপেক্টর বা তাঁর উপরের পদমর্যাদার কর্মকর্তা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা হিসেবে পাইরেটেড দ্রব্য কিংবা নকল করার সামগ্রী জব্দ করতে পারবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *